ফুলতলার ইতিহাসে স্মরণীয় দিন ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর। চারদিকে সাজ সাজ রব পড়ে। আয়োজন রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের উদ্বোধন নিয়ে। খুলনা ও ঢাকার দৈনিক গণমাধ্যমগুলো আকর্ষণীয় প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
১৯৯৫ সালের ১৪ নভেম্বর দৈনিক পূর্বাঞ্চলে পত্রিকার শিরোনাম ছিল- ‘অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের উদ্বোধন’। এই সংবাদ সূচনাতে ছিল- বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর দক্ষিণডিহির পৈত্রিক ভবনটি দীর্ঘ প্রায় ৫০বছর পরে পুনরুদ্ধারের পর গতকাল দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স-এর উদ্বোধন হল। দক্ষিণডিহি মৌজার রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়িটি দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর অবৈধ দখলে ছিল। ৫০ বছর পর ভবনসহ জমি উদ্ধারের পর খুলনা জেলা প্রশাসন উক্ত ভবনে দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা নেয় ।
১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর ওই সময়কার প্রচারিত বাংলাবাজার পত্রিকার শিরোনাম ছিল- ‘রবীন্দ্রনাথের শ্বশুর বাড়ি এখন থেকে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স’। প্রতিবেদনের সূচনা ছিল- গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স-এর উদ্বোধন করা হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুর বাড়িতে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক কাজী রিয়াজুল হক।
একই সাথে ১৫ নভেম্বর ১৯৯৫ সালের ভোরের কাগজে পত্রিকার শিরোনাম ছিল- ‘খুলনার ফুলতলায় রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের নামফলক উন্মোচন’। এই সংবাদে ছিল- কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহধর্মিনী মৃণালিনী দেবীর দক্ষিণডিহি গ্রামের পৈত্রিক ভবনটিতে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স নির্মিত হতে যাচ্ছে। গতকাল রবীন্দ্র কমপ্লেক্স পরিচালনা পরিষদের পক্ষে এর নামফলক উন্মোচন করেন পরিষদের সভাপতি ও খুলনা জেলা প্রশাসক কাজী রিয়াজুল হক। এ উপলক্ষে দক্ষিণডিহি গ্রামে আয়োজিত হয় আলোচনা সঙ্গীতানুষ্ঠানের। ফুলতলার ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক রাজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সঙ্গীত শিল্পী ড. সন্জীদা খাতুন, কথাশিল্পী হাসান আজিজুল হক, কন্ঠশিল্পী পাপিয়া সারোয়ারসহ বক্তৃতা করেন ম, হামিদ, অধ্যাপক সুশান্ত সরকার, অধ্যাপক অচিন্ত্য ভৌমিক প্রমূখ।
দৈনিক জনকণ্ঠ ১৯৯৫ সালের ১৫ নভেম্বর পত্রিকার শিরোনাম ছিল- ‘দক্ষিণডিহিস্থ রবীন্দ্রনাথের শ্বশুর বাড়িটি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের মর্যাদা পেল’। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ ছিল- ফুলতলা উপজেরা সদর থেকে প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দূরে রবীন্দ্রনাথের শ্বশুর বাড়ি অবস্থিত। জরাজীর্ণ অবস্থায় দক্ষিণমুখী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ভবনটির পাশে নতুন রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের ফলক স্থাপন করা হয়। ভবনটির সিঁড়ির দু’পাশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবিপত্নী মৃণালিনী দেবীর আবক্ষ মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ভবনটির বাম পাশে প্রায় ৫০ গজ দূরে শাখা-প্রশাখা বিস্তৃত বিরাট এক সবেদা গাছের চারপাশ ঘিরে বৃত্তাকারে ইট-সিমেন্টের গাঁথুনি দিয়ে ‘মৃণালিনী মঞ্চ’ তৈরি করা হয়।
১৯৯৫সালের ১৫ নভেম্বর দৈনিক অনির্বাণে পত্রিকার শিরোনাম ছিল- ‘দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স উদ্বোধন’। ঐ সংবাদে উল্লেখ ছিল- গতকাল খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর স্মৃতি বিজড়িত পৈত্রিক বাড়িতে রবীন্দ্র কমপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। সাত একর জমির ওপর নির্মিত ঐতিহাসিক বাড়িটি বর্তমানে দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্সে রূপান্তরিত হয়েছে। কমপ্লেক্সে রয়েছে মৃণালিনী মঞ্চ, সংগ্রহশালা ও রবীন্দ্র ইন্সটিটিউট।
খুলনা গেজেট/এএজে